ডালিম কুমার দাস টিটু ঃ সারা বিশ্বে করোনা মহামারিতে আজ বিপর্যস্ত মানবজীবন । অক্সিজেন শেষ হাসপাতালে রোগি কাতরাচ্ছে । মানবতার ছেয়ে বড় আর কিছু নেই এগিয়ে এসেছে মানবিক মানুষগুলো । শত্রুতা ভুলে আজ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে শত্রু । কোনঠাসা কথা আজ কেউই বলেনা সবাই আজ সৃষ্টিকর্তার কাছে দুহাত তুলে মানুষের জন্য কাঁদছে রক্তের কারো জন্যে নয় অন্য ধর্মের ভাইয়ের জন্য । আবার সুন্দর হবে পৃথিবী সকল ধর্মের মানুষ একসাথে সুন্দর করে বসবাস করবে সৃষ্টিকর্ত আবার আমাদের মাঝে শান্তির বাতাস বইয়ে দেবেন । আমরা যদি একটু চিন্তা করি রক্তের রং লাল । হিন্দু ভাইয়ের রক্তের প্রয়োজন হলে মুসলিম ভাই পাগল হয়ে ছুটে আসে । এক ধর্মের রক্ত অন্য ধর্মের মানুষের শরিরে বইছে । বেঁচে যায় একটি প্রাণ । আইসোলেশন সেন্টার বানানো হচ্ছে মন্দিরে । মসজিদকে হাসপাতাল বানানো হয়েছে। হিন্দুদের সৎকারে সাহায্য করছে মুসলিম ভাইয়েরা।নিজের জমিকে উন্মুক্ত শশ্মান বানাতে ছেড়ে দিয়েছেন খ্রিষ্টান ভদ্রলোক।বৌদ্ধরা কাজ করছে লাশের পরিচয় বের করার জন্য, কে কোন ধর্মের বুঝতে পারার পরই তার বিদায়ের আয়োজন করছেন সে ধর্ম অনুসারে।মুসলিমদের কবর দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান সবাই । খ্রিষ্টানদের বিদায়ে সামিল অন্য ধর্মের ভাইয়েরা৷অক্সিজেনের হাহাকার আর মৃত্যুর এমন হৃদয়বিদারক ইতিহাসে সব ধর্মের লোক মিলেমিশে একাকার । আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে ধর্ম মানে শান্তি উগ্রতা নয়৷
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আজ ১০০টি ভেন্টিলেটর, ৯৫টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম ভারতে এসে পৌঁছেছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতকে কোভিড ভ্যাকসিন ও অন্যান্য মেডিকেল সামগ্রী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এবং পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে নরেন্দ্র মোদির টেলিফোনে আলোচনার পর ইতিমধ্যে টিকা তৈরির যাবতীয় কাঁচামাল, অক্সিজেন সিলিন্ডার, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর সহ বহু জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে একটি বিশেষ বিমান ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। জো বাইডেন সরাসরি বলে দিয়েছেন, “আমাদের বিপদে ভারত পাশে ছিল, আমরাও সর্বশক্তি দিয়ে ভারতের পাশে থাকবো”।
৫ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার আর ৮০ হাজার মেট্রিক টন লিকুইড অক্সিজেন ভারতকে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে সৌদি আরব, আরো পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতও অক্সিজেন সিলিন্ডার সহ যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রী ভারতে পাঠাচ্ছে।
ইসরাইল ইতিমধ্যে ১০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন পাঠিয়েছে! আরও ব্যাপক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
চিকিৎসা সামগ্রী, অক্সিজেন সিলিন্ডার, এম্বুলেন্স, আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটর দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস এবং রীতিমতো এইসব সামগ্রী পাঠাতে শুরু করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়াল ম্যাক্রো, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গোলা মরকেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া সহ পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা ভারতবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখনো পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ টি দেশ ভারতের এই মহাদূর্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, এটাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য একটা অভূতপূর্ব অর্জন।
পিছিয়ে নেই ভারতের বৃহৎ ব্যাবসায়ীগণও! রতন টাটা জার্মানির কোম্পানির থেকে ২৪ টি “মোবাইল অক্সিজেন প্ল্যান্ট” কিনেছেন এবং ভারতীয় বিমানবাহিনী দায়িত্ব নিয়েছে এইসব অক্সিজেন প্ল্যান্টগুলো সুরক্ষিত অবস্থায় ভারতে নিয়ে আসার। ভারতের রিলায়েন্স গ্রুপ, টাটা গ্রুপ, হিন্দুজা গ্রুপ, মারুতি গ্রুপ, অশোক লি-ল্যান্ড, মাহেন্দ্র গ্রুপ সহ বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারগণ সেই দেশের জনগণ এবং সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের মিডিয়া আর হাজার হাজার লাখো লাখো ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে শুধু ভারতের রাজধানী দিল্লির বিভিন্ন শ্মশানে চিতার আগুনের ছবি ভিডিও দেখছি, দিল্লিতে কি শুধু হিন্দুদের চিতা জ্বলছে!!!??? আপনারা কি জানেন দিল্লির সবচাইতে বড় কবরস্থান “জাভেদ আহলে ইসলাম” এর দাফনের জায়গাও ফুরিয়ে এসেছে??? সেখানে আর কবর দেওয়ার স্থান প্রায় নেই, খোঁজা হচ্ছে পাশ্ববর্তী দূরের কোন এলাকা।দিল্লির গাজীয়াবাদের চিতার আগুনে দিনরাত শবদাহ সৎকারের ঘটনাগুলো বেশি বেশি প্রচার করে বাংলাদেশের একশ্রেণির মিডিয়া এটাই প্রমাণ করতে চাইছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার তথা ভারতের জনগণ করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ! আসলেই কি তাই??? উপরের তথ্যগুলো পড়ে আপনাদের কি মনে হচ্ছে???একপেশে অতিরঞ্জিত প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে আতংকিত না করে, দয়া করে সঠিক তথ্যগুলো নিজেরা জানুন এবং সকলের কাছে প্রচার করুন।