মজু চৌধুরীর হাট , লক্ষ্মীপুরের একটি অন্যতম পর্যটন শহর।

মজু চৌধুরী হাট

মজু চৌধুরীর হাট বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলের একটি অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র ও শহর। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার অন্তর্গত চররমনী মোহন ইউনিয়নে অবস্থিত। এই শহরটি ১৯৬৫ সালে মজু চৌধুরীর হাট নামে স্থাপিত হয়। যার পূর্বের নাম ছিল রহমত খালি। বরিশাল বিভাগের ৩০ শতাংশ জনসাধারণ মজু চৌধুরী হাট দিয়েই যাতায়াত করেন।

মজু চৌধুরীর হাটটি মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বেষ্টিত মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। এখানে রয়েছে ফেরী ও লঞ্চঘাট বা টার্মিনাল। ঘণ্টায় ঘণ্টায় আসে বিভিন্ন জেলা থেকে ২ তলা ৩ তলা উন্নতমানের লঞ্চ। এখানে যাত্রী সাধারণের কোলাহল ও ভিড় রাতদিন লেগেই থাকে। আরও রয়েছে নদীতে হাজারো জেলের রঙ্গিন পাল তোলা নৌকার অপরূপ দৃশ্য।

রহমত-খালী থেকে মেঘনা নদী পর্যন্ত নদীর দু’ধারে রয়েছে নানা জাতের গাছ লাগানো সবুজ ছায়াঘেরা দৃশ্য, যা মন কেড়ে নেয়। মেঘনা নদীতে জেলেদের ঐতিহ্যবাহী রূপালী ইলিশ মাছ ধরার কৌশল স্বচক্ষে দেখার দৃশ্য দেখতে হলে এবং আনন্দ উপভোগ করতে হলে এখানে এসে যান্ত্রিক নৌকা/ট্রলারে চড়ে ঘুরে ঘুরে বেড়ানো যায় মনের আনন্দে। একদিকে গায়ে নির্মল হাওয়া লাগিয়ে অপরদিকে দু’নয়নে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাখেলা উপভোগ করা যায়। সেই সাথে মনের আনন্দে উপভোগ করা যায় পড়ন্ত বিকেলে লাল আভায় সূর্য অস্ত যাওয়ার এক অপূর্ব মনোরম দৃশ্য।

মজু চৌধুরী হাট এর পাশে রয়েছে সাইফিয়া দরবার শরীফ। আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন এই দরবার শরীফের নির্মাণ শৈলী ও কারুকার্য খচিত নকশা যে কোনো দর্শনার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। প্রায় ৪০ একর জায়গা জুড়ে এই দরবার এরিয়ায় রয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, কুতুবখানা, লংগরখানা, লাইব্রেরিসহ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ও দাতব্য চিকিৎসালয়।

   আরো পড়ুন, দালাল বাজার খোয়া সাগর দীঘি  click

মজুচৌধুরীর হাট এর নামকরন ও ইতিহাসঃ

মজু চৌধুরী ছিলেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি যিনি জন্মগ্রহণ করেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়ন এলাকার এক চৌধুরী পরিবারে। মজু চৌধুরী ছিলেন পানা মিয়া হাজীর দ্বিতীয় পুত্র তিনি ছিলেন পানা মিয়ার চার পুত্রের মধ্যে অত্যন্ত মেধাবী,তৎকালীন তিনি রহমত খালি এলাকায় এসে প্রায় শতাধিক জায়গা জমি কিনেন, তত-দূর কেউ তাহার সমান প্রভাবশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠিত ছিল না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ও পূর্বে এই মজু চৌধুরীর হাট টি প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯৬৫ সাল সম্পর্কিত এটির নাম উল্লেখ করেছে এখানকার অস্থায়ী লোকজন রা তখন থেকেই মজু চৌধুরীর হাট জায়গাটি ভালো পরিচিত হয়ে উঠে।

মজুচৌধুরীর হাট  যাতায়তঃ

লক্ষ্মীপুর শহর থেকে ১২ কি:মি: দূরে অবস্থিত মজুচৌধুরীর হাট। ভোলা থেকে মজু চৌধুরীর হাট ২৬ কিলোমিটার, বরিশাল থেকে ৭৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে মজু চৌধুরীর হাটে ৩টি ফেরি চলাচল করে ও তাতে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। এছাড়াও এখান থেকে বিভিন্ন রুটে ত্রিশ থেকে চল্লিশটি বাস যাতায়াত করে থাকে । লক্ষ্মীপুর বাসস্টান্ড থেকে সিএনজি/অটোরিকশা যোগেও এখানে যাওয়া-আসা করা যায়।

 

লক্ষ্মীপুর জেলাকে  আরো জানতে পড়ুন click

3 thoughts on “মজু চৌধুরীর হাট , লক্ষ্মীপুরের একটি অন্যতম পর্যটন শহর।

how do you feel about this website ?

%d bloggers like this: