লক্ষ্মীপুরে বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার নতুন করে আরও ১৬১ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনের রাখা হয়েছে। এ নিয়ে লক্ষ্মীপুরে ৩৭৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের রাখা হলো। বুধবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সংখ্যা ছিল ২১৪ জন। নতুন ১৬১ জন যোগ হয়ে সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৭৫ জনে। তবে ৩৭৫ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও জেলায় এখন পর্যন্ত বিদেশ ফেরতর সংখ্যা ৩৬৬২ জন। এ ছাড়া নির্ধারিত ১৪ দিন মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্ত করা হয়।
এ দিকে করোনা সচেতনতায় এক জরুরী সভা করেছে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক। বুধবার রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল, পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান, সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল জানান, বিদেশ ফেরত সকল প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কেউ যদি আইন অমান্য করে তাহলে তাকে জেল-জরিমানা করা হবে। বাজারে কোন কিছুর ঘাটতি নেয়, ব্যবসায়ীরা যাতে করোনার সুযোগ নিয়ে দাম বাড়াতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রেখে বাজার মনিটরিং করার জন্য ব্যবসায়ী নেতা-দের বলা হয়েছে। এ ছাড়া সকলের কথা চিন্তা করে জেলায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, ওয়াজ-মাহফিল, বিয়ের অনুষ্ঠানসহ জনসমাগম হয় এমন সকল ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানায়, লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩৭৫ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। বিগত দুই সপ্তাহের মধ্যে বিদেশ ফেরত কেউ থাকলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়ে কোয়ারেন্টাইনের পদ্ধতি, করণীয় সম্পর্কে জানতে ১৬২৬৩ এবং ৩৩৩ নাম্বারে ফোন করতে বলা হয়েছে। এ দিকে করোনা সচেতনতায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে জ্বর, সর্দি, কাশি রোগীদের জন্য আউট ডোরে সম্পূর্ণ আলাদা টিকেট কাউন্টার করা হয়েছে। এ সব রোগীদের জন্য আলাদা রুমে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা তিন ফুট দূরে বসিয়ে রোগীদের হিষ্ট্রি, অবস্থা জানছেন ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার জানান, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে পরিবার ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে তাদেরকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। লক্ষ্মীপুর জেলায় গত ৪ সপ্তাহে ৩৬৬২ জন প্রবাসী প্রবেশ করেন। বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন থেকে এদের তালিকা আসে। সাথে সাথে বিষয়টি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীগণকে অবহিত করা হয়। বিদেশ ফেরত এইসব লোক জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে আসার পর তাদের চিহ্নিত করা হয়। সন্দেহজনক হিসেবে তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা কোন ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া যায়নি। তারা সবাই সুস্থ আছেন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও এমন সন্দেহজনক রোগীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য লক্ষ্মীপুর জেলার চারটি হাসপাতালে ১০০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।