ডালিম কুমার দাস টিটু ঃ লক্ষ্মীপুর রামগতিতে ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজে ব্যাপক অনিয়ম এবং লুকোচুরি লুকোচুরি খেলা চলছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রথম ধাপের কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে জানুয়ারীতে এবং দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হবে মার্চ থেকে । এই প্রকল্পের মাধ্যমে হত দরিদ্রকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে সরকারের মহতি উদ্যেগ ৪০ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে কাজের বিনিময়ে একজন শ্রমিক তার জিবীকা নির্বাহ করবেন পাশাপাশি হবে এলাকার রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন । লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সেই ৪০ দিনের কর্মসৃজনের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ,দূর্নীতি এমন কি লুকোচুরি খেলা চলছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রথম ধাপের কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে জানুয়ারীতে এবং দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হবে মার্চ থেকে । যদিও এই কর্মসৃজনের কাজটি হওয়ার কথা স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে কিন্তু বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা বেশি টাকা লাভের আশায় ভেকু দিয়ে কাজটি করছেন। রামগতিতে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা বলছে কাজ শেষ আর প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) বলছে কাজ শুরুই হয়নি। তাহলে কি কাজ ছাড়া সরকারের এই টাকা কারো পকেটে চলে যাবে ? যদিও প্রকল্প কর্মকর্তার অফিস থেকে ইউনিয়ন গুলোর কাজের প্রকল্প অনুমোদন করা হয় এবং সেই সাথে শ্রমিকদের নামের তালিকা প্রকাশ এবং শ্রমিকদের ব্যাক্তিগত বিকাশ মোবাইল থাকার কথা দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন শ্রমিকের মোবাইল বিকাশ নেই তাছাড়া চেয়ারম্যান ও প্রকল্প সভাপতিরা শ্রমিকদের নামের কোন তালিকাও প্রকাশ করেননি । জানুয়ারী মাসে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজটি ২৮ ফেব্রুয়ারীতে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্প কর্মকর্তার ভাষ্য মতে এবং মাঠ পর্যায়ে এই কাজের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি । সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায় বেশিরভাগ রাস্তাঘাটগুলো মুড়ির টিনের মত হয়ে আছে সেই সাথে গ্রামের অসহায় গরিব মানুষগুলো কর্মের অভাবে ছেলে মেয়ে নিয়ে দূর্ভোগে জীবন যাপন করছেন । প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানাযায়, রামগতির ৮ টি ইউনিয়নে এবারের ৪০ দিনের কর্মসৃজনের কাজে ৩ হাজার ৫২ জন শ্রমিকের কাজ করার কথা রয়েছে , শ্রমিক প্রতি ৪০০ টাকা মজুরি হারে প্রায় ৪ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে । জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের ২৮ তারিখের ভিতরে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে অথচ রামগতিতে দৃশ্যমান কোন কাজ লক্ষ্য করা যায়নি। সরেজমিনে গিয়ে পাশের উপজেলা কমলনগরের দেখা যায় ২/১ টি ইউনিয়ন ছাড়া যেমন চরকালকিনি ইউনিয়ন ,তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন সহ প্রায় সব ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধিরা তাদের ব্যাক্তিগত টাকা খরচ করেও এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছেন । অথচ রামগতির এই প্রকল্পটির লুকোচুরি খেলা নিয়ে জনগন হতাস ,তাহলে রামগতিতে সরকারের দেয়া উন্নয়নের বরাদ্দ যাচ্ছে কোথায় ? খাচ্ছে কে ? প্রশাসনের চাপাচাপিতে মাঝে মাঝে কাজ করলেও কাজের মান নিয়ে জনগনের ব্যাপক প্রশ্নের সম্মূক্ষীণ হন জনপ্রতিনিধিরা। এরই মধ্যে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে কাজ না করে এই প্রকল্পের টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে খাওয়ার পরিকল্পনা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী ও স্থানীয় ইউপি সদস্যরা জানান , আমাদের মুখে মুখে জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন কাজে আমাদের ডাকা হয়না অন্যদিকে এলাকাবাসীরা বলছেন ভিন্ন কথা তারা বলেন, ভোটের সময় ভোট চাইতে আসে কিন্তু ভোট শেষ হয়ে গেলে আমাদের কোন খবর রাখেননা চেয়ারম্যান মেম্বাররা । তারা এমনও বলেন, কর্মসৃজনের কাজ শেষ পর্যায়ে অথচ পিআইও তার সংশ্লিষ্টরা এবং জনপ্রতিনিধিরা মিলে আজকাল করে কাজের সময় পার করছেন কাজের মেয়াদ শেষ হলে টাকা উত্তোলণ করে নিজেরা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে যাবে ।
চেয়ারম্যানরা বলেন, যেহেতু শ্রমিকদের টাকা আসবে বিকাশে । তাহলে শ্রমিকরা কাজ করলে তাদের নগদ টাকা দিতে হবে । তাহলে আমরা টাকা দিলে আমাদের টাকার নিশ্চয়তা কি?
তবে এ ব্যপারে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি চর বাদাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম । ৪০ দিনের কর্মসূচির কথা বললে তিনি ভিন্ন প্রসঙ্গ তোলেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি । ক্যামেরার বাহিরে তিনি বলেন, আপনি দেখান কোন জায়গায় কাজ শুরু হয়েছে ? পাশের উপজেলা কমলনগরে কাজ শেষ পর্যায়ে আছে আপনার উপজেলায় কেন এখনো শুরু হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজ এখনো শুরু হয়নি এবং শেষও হয়নি । চেয়ারম্যানরা যদি আমাকে তালিকা না দেয় তাহলে আমি কাজ শুরু করবো কিভাবে? তবে তিনি বলেন, কাজ না করে কাউকে কোন ধরণের বিল দেওয়া হবেনা প্রয়োজনে টাকা ফেরৎ যাবে।
হতদরিদ্রের কর্মসৃজনের কাজের তালিকা তৈরী , শ্রমিকদের বিকাশসহ বিভিন্ন গোপণীয়তা করার কারণ কি ?
জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তনু চৌধুরী কাজ হওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন , চেয়ারম্যানরা তালিকা না দিলে কাজ শুরু করবো কিভাবে ? এখন তালিকা পাঠানো হয়েছে শীঘ্রই কাজ শুরু হবে কোন ধরনের ভেকু ব্যবহার করা যাবেনা শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করতে হবে ,কাজ করতে চেয়ারম্যানদের অনিহার কারন হিসেবে তিনি বলেন কোন চেয়ারম্যানের যদি কোন ধরনের মত বিরোধ থাকে তাহলে তারা আমার কাছে লিখিত ভাবে জানাবে।
২/১ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা কিছু কাজ শুরু করেছেন বিল পান নাই , আবার ২/১ জন চেয়ারম্যান কাজ শেষ করেছেন বিলের অপেক্ষায় আছেন । অথচ প্রকল্প কর্মকর্তা জানেনইনা তারা কাজ করেছেন । এখনো তালিকাই পাননি প্রকল্প কর্মকর্তা তাহলে কিভাবে কাজ করেছেন এই চেয়ারম্যানরা ? তাই হত দরিদ্রদের এমন কাজ নিয়ে লুকোচুরি না করে সঠিক ভাবে কাজ করে এলাকার উন্নয়ন এবং জনগনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার অনুরোধ জানান স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা।